গর্ভ ধরণের ৩-৪ সপ্তাহের মধ্যে ভ্রূণের হৃদপিন্ড তৈরী হয় ও হৃদস্পন্দন শুরু হয়।
পঞ্চম সপ্তাহে ভ্রূণের দৈর্ঘ্য ৯ মিলি মিটার হয়। এ সময় মুখ নাক ও চোখের আভাস নিয়ে শিশুর মুখাকৃতি তৈরী হতে থাকে। ষষ্ঠ সপ্তাহে Placenta (গর্ভ ফুল/নাড়ী ) তৈরী হয় যার মধ্যমে অপূর্ণ মানব শিশু মায়ের কাছ থেকে খাদ্যরস ও অক্সিজেন সংগ্রহ করতে পারে।
দশম সপ্তাহে চক্ষুপাতা অর্ধ-নিমীলিত থাকে যা দুই এক দিনের মধ্যে ধ্যানস্থ ঋষির মতো মুদ্রিত হবে। ষোড়শ সপ্তাহে শিশু তার নিজ দেহ ও পরিবেশ উপলব্ধির জন্য তার হাত ব্যবহার করতে পারবে।

শুরু হয় শিশুর গন্ডির বাইরে দেহ আর পরিপার্শ ছুঁয়ে উপলব্ধির ভ্রমণ। এ সময়ের নমনীয় তুলতুলে হাড্ডিই শিশুর Skeleton বা কঙ্কাল। শিশুর পেলব ত্বকের বাইরে দিয়ে রক্তনালীর বিস্তৃত জালিকা দৃশ্যমান হয়। আঠারো সপ্তাহে শিশুর দৈর্ঘ্য হয় ১৪ মিলি মিটারের মতো। এ সময় শিশু বাইরের দুনিয়ার শব্দ অনুভব করতে পারে। বিশ সপ্তাহে ২০ সে. মি.দৈর্ঘ্য হয় মানব শিশুর। উলের মতো চুলে সারা মাথা ছেয়ে থাকে এ সময়ে।

এখনো ১৫ সপ্তাহের কমবেশী সময় বাকী। বাইরের পৃথিবী উন্মূখ হয়ে আয়োজনে ব্যাস্ত না দেখা অতিথীকে বরণ করতে। মাতৃ গর্ভের অতিথীও প্রস্তূতি নিতে থাকে নুতন ভুবন ভ্রমণের। শয়নের দিক পাল্টায় শিশু। দুনিয়ার সবকিছু মাথা পেতে নেওয়ার সম্মতির মতো ‘হেট-মুণ্ড-উর্ধপদ’ অবস্থার প্রতীক্ষায় থাকে পরম প্রহরের। এভাবেই আশা সহজতর শিশুর জন্য।

৩৬ থেকে ৪০ সপ্তাহের কোনো এক শুভ আরতি-লগ্নে মাটির পৃথিবীতে আগমণ ঘটে অমৃতের সন্তানের।

শিশুর এ দীর্ঘ ভ্রমণ শুরু হয়েছিল ‘আলমে আরওয়াহ’ বা রুহের জগৎ থেকে এবং মাতৃ গর্ভে শিশুর বয়স ১২০ দিনের মাথায় আল্লাহর ফেরেশতা কতৃক ‘রূহ’ ফুৎকারের মাধ্যমে।

“তারা আপনাকে রূহ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বলে দিন, “রূহ আমার পালনকর্তার আদেশঘটিত। এ বিষয়ে তোমাদেরকে সামান্য জ্ঞান দান করা হয়েছে। ” (সূরা বনী-ইস্রাঈল, আয়াত-৮৫)
রূহ সম্পর্কে এতটুকু জ্ঞানই মানুষের জন্য যথেষ্ট। এর চেয়ে বেশি জ্ঞান ধর্মীয় বা পার্থিব প্রয়োজনে প্রয়োজনীয় নয়।

আব্দুল্লাহ ইব্নে মাসুদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদিস অনুযায়ী ঐ রূহ আগমনের সময় বান্দার নিম্নোক্ত বিষয়ের সিদ্ধান্ত লেখা হয় :
১) তার কর্ম ২) তার জীবিকা ৩) তার মৃত্যুক্ষণ ৪) সে বেহেস্ত (স্বর্গ) লাভ করবে না জাহান্নাম (নরক)…..(চলবে)

Categories: Uncategorized

2 Comments

Krishna Chandra Ganguly · May 15, 2019 at 6:34 am

লেখককে অভিনন্দন জানা, এমন জ্ঞানগর্ভ একটি সুন্দর বৈজ্ঞানিক বিষয়কে ধর্মীয় বিশ্বাসের সাথে মেলবন্ধন ঘটাবার নান্দনিক প্রচেষ্টার জন্য। আমার জানামতে তিনি চিকিৎসা শাস্ত্রের ছাত্র নন আবার ভ্রুনতত্ববিদ বা Embryologist ও নন। আসলে জ্ঞানের উচ্চমার্গে আরোহনের পর গনিত, পদার্থ, রসায়ন, জীবতত্ত্ব,শিল্প, দর্শন এবং ধর্মতত্ত্ব বিশেষত আপেক্ষিক ধর্মতত্ত্ব একাকার হয়ে যায়। যেটা আমরা আমাদের পূর্বেেেরযুগের ফিলোসোফার বা দার্শনিক দের মধ্যে ( সক্রাতুস, আরিস্তোতল,প্লাতো ইত্যাদি) পাই। ধন্যবাদ লেখককে মানুষের জ্ঞানচক্ষু খুলে দেবার এই মহতি প্রচেষ্টার জন্য।।

    admin · May 16, 2019 at 7:23 am

    Professor Doctor Ganguly,I put my hat off with awe and reverence to you. You crowned me more with what I do not deserve. This is your specialty and this made you different from the crowed. I long for if I could be as Mr Ganguly is!!
    Actually when I plunge myself in the thought of the finite and infinite I get dissolved into bewilderment. Life is a story of which we do not know the beginning and the ending. We only bark in the present. If we could know the beginning, the being and the ending, we could have a glimpse of the immortal life. But what a robotic repetitive life we are leading! Interesting that humans crave for extended life span to do that monotonous repetitive thing!!

    “চরৈবেতি চরৈবেতি।…”
    কিন্তু কেনো ??

Leave a Reply

Avatar placeholder

Your email address will not be published. Required fields are marked *