আলম এ আরোআহ থেকে আলম এ খালেক এ ভ্রমণ:
পৃথিবীতে নিজ প্রতিনিধি পাঠানোর অভিপ্রায়ে স্রষ্ঠা সর্বপ্রথম সমস্ত ‘রূহ’ সৃষ্টি করেন। রূহগুলোকে কাতারবন্দী করে আল্লাহ জিজ্ঞাসা করলেন,”আলাস্তু বে রব্বিকুম ” আমি কি তোমাদের প্রভু নই ?” উত্তরে রূহগুলো সমস্বরে উত্তর দিয়েছিলো, “বালা “, হাঁ, নিশ্চয়ই।
আল্লাহ রূহগুলোকে উদ্দেশ্য করে আরো বলেছিলেন,”যদি তোমরা দুনিয়া ও দুনিয়ার সুখ সম্পদ বিত্ত বৈভব চাও, আমি তাই দেব। যদি তোমরা জান্নাত চাও, আমি তাই দেব। যদি তোমরা স্বয়ং আমাকে চাও, তাহলে আমি তাও দেব।
এর পর রূহগুলোকে দশ ভাগে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করায়ে সবার অভিপ্রায় জানতে চাইলেন। দশভাগের মধ্যে নয় ভাগই দুনিয়া চাইলো।

অবশিষ্ট এক ভাগকে দশ ভাগে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করায়ে সবার অভিপ্রায় জানতে চাইলেন। দশভাগের মধ্যে নয় ভাগই দুনিয়া চাইলো।

অবশিষ্ট এক ভাগকে দশ ভাগে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করায়ে সবার অভিপ্রায় জানতে চাইলেন। দশভাগের মধ্যে নয় ভাগই দুনিয়া চাইলো।

সৃষ্টিকর্তা ক্রোধান্বিত হয়ে আর জিজ্ঞাসার পুনরাবৃত্তি করলেন না।
সর্বশেষ এক দশমাংশ হচ্ছে নবী পয়গম্বর আউলীয়া দরবেশদের রূহ।

এর পর রূহ সমূহের ক্রমান্বয়ে পৃথিবী ভ্রমণের পালা।
কল্পলোকের চন্দ্রালোকিত উষ্ণ আবাস ছেড়ে ভূমিষ্ঠ শিশুর চিৎকার সবাইকে সচকিত করে তোলে। সব থেকে ভিন্ন এ মধুর স্বর। শচীনদেব বর্মণ তাঁর শিশুপুত্র রহুলদেব বর্মণের জন্মের পর শিশুপুত্রের কাঁন্নার মধ্যে পঞ্চম স্বরের (পা ) সাযুজ্য খুঁজে পেয়ে ছেলের নাম রেখেছিলেন ‘পঞ্চম’ বা কোকিলের স্বর।

শিশুর কাঁন্নায় কাতর হয়ে উঠেন জনক-জননী। শিশুকে শান্ত করতে কতইনা প্রচেষ্টা স্বজনদের !

কিন্তু ভূমিষ্ঠ শিশুর অন্তরাত্মা এই বিনাশ চায় না। উৎসের স্মৃতিকাতরতায় আরো ফেনিল হয় শিশু হৃদয়। ভ্রমণের এ পর্যায়ের এক অসাধারণ উপমা দিয়েছেন মৌলানা জালালুদ্দীন রুমী তাঁর অমর গ্রন্থ মসনবী শরীফের শুরুতেই:
“বেশনু আজ ন্যায় চুঁ হেকায়েৎ মি কুনাদ
আজ জুদাইহা শেকায়েৎ মা কুনাদ। “

“বাঁশির করুণ কান্না তুমি শুনেছ ? বাঁশ ঝাড় থেকে বিচ্ছিন্ন করে নিয়ে আসার মর্ম পীড়ায় কাতর বাঁশি করুণ স্বরে উৎসে ফিরে যাওয়ার জন্য যে কান্না করে তাই বাঁশির সুর।”

ভূমিষ্ঠ শিশুর এ কান্নাতো বাঁশির রূপক কান্নার প্রতিধ্বনি। আলমে আরওয়াহ থেকে বিচ্ছিন্ন রূহ উৎসে ফিরে যাওয়ার জন্য আর্ত চিৎকার করে ক্রন্দন করে।

নবজাত শিশু ক্রমে বড়ো হয়।পরিণত বয়সে ধরিত্রীর নানা ফল-ফসলের পুষ্টি রসে সমৃদ্ধ হয়। শিশু উপনিত হয় জনক-জননী হওয়ার স্তরে। স্রষ্ঠার সৃষ্টি একসময় নিজেই সৃষ্টি করতে চায়। নিজেদের প্রজন্ম শোনিত ধারায় লীন।
কোনো এক মহেন্দ্রক্ষনে বিজয়ী শুক্রাণু ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করে সূচনা করে মহাকালের অমোঘ ধারাবাহিকতার এক হৃদয় নিংড়ানো নতুন পর্ব।

পিতা থেকে ২৩টা মাতা থেকে ২৩টা, মোট ৪৬টা ক্রোমোজোম নিয়ে মায়ের গর্ভে আশ্রয় নেয় শিশুযাদুকর।
প্রথম দিনেই শুক্র ফেলোপিয়ান টিউব এর দিকে ভ্রমণ শুরু করে। পঞ্চম ষষ্ঠ দিনে বিভাজিত হয়ে অগণিত কোষ Blastocyst নাম মাতৃ গর্ভে পৌঁছায়। অষ্টম দিনে ভ্রূণ মাতৃ-গর্ভের দেয়ালে লেপ্টে থাকে।
পবিত্র কোরান যাকে “খালাকাল ইনসানা মিন আলাক ” বলেছে। আলাক অর্থ ঝুলে থাকা বা লেগে থাকা জমাট রক্তবিন্দু। (চলবে )

Categories: Uncategorized

2 Comments

Rabiul · May 16, 2019 at 1:22 pm

অসাধারন! Speritual thinking….

    admin · May 17, 2019 at 3:39 am

    Dear Mr Rabiul,thank you very much. Comments and Criticism from you the readers directs us towards the true destination.
    Please keep me in your prayer.

Leave a Reply

Avatar placeholder

Your email address will not be published. Required fields are marked *