হযরত জুনাইদ বাগদাদিকে সূফীতত্ত্ব প্রচার ও প্রতিষ্ঠায় অবদানের জন্য “সুলতান” উপাধিতে সম্বোধন করা হয়।

একদিন জুনায়েদ বাগদাদি মুরিদান সহ বাজারের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন।

এক লোক একটা গাভীর রশি ধরে ঐ পথে ধরে এগুচ্ছিলেন। জুনায়েদ বাগদাদি লোকটাকে বল্লেন, “দাঁড়াও”।

মুরিদদেরকে বল্লেন, “ঐ লোকটার চারিদিক ঘিরে দাঁড়াও তোমরা। আজ আমি তোমাদেরকে একটা জিনিস শিখাবো।“
জুনায়েদ বাগদাদি মুরিদদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, ”বলোতো, কে কার অধীন? অর্থাৎ লোকটা গাভীটার অধীন না গাভীটা লোকটার অধীন?”

এক মুরিদ বল্লেন, ”অবশ্যই গাভীটা মানুষটার অধীন। মানুষটা মুনিব, সে গাভীটাকে রশিতে বেঁধে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। গাভীটা ঐ লোকটাকে অনুসরণ করে চলছে। লোকটা যেদিকে যাবে, গাভিটাকেও সেই দিকে যেতে হবে। লোকটা মুনিব আর গাভীটা দাস।“

জুনায়েদ বাগদাদি একটা ছুরি দিয়ে গাভিটার রশি কেটে দিলেন এবং গাভীটা দৌড়ে পালালো।

মালিক লোকটা গাভিটার পিছনে দৌড়াতে শুরু করলো।

জুনায়েদ বাগদাদি বলা শুরু করলেন, ”দেখো কি হয়! এবার দেখো কে মুনিব আর কে গোলাম! গাভীটা এই লোকটার ব্যপারে মোটেই আগ্রহী না। সত্যি কথা কি, গাভীটা লোকটা থেকে দৌড়ে পালাচ্ছে।“

গাভির মালিক রুষ্ট হয়ে বলল, ”এ কেমন ধরনের ফাজলামো?”

জুনায়েদ তাঁর মুরিদদেরকে বল্লেন, ”এই হচ্ছে তোমাদের মনের অবস্থা। তোমাদের রূহানী হালত।“
তোমাদের মনের ভিতরে যত ভোগ বিলাসের আবর্জনা তোমরা জড়ো করে রেখেছ তা তোমাতে আগ্রহী না। তোমরা পাগলের মতো এই সব তুচ্ছ জিনিস দিয়ে তোমাদের ভিতর-বাহির একাকার করে রেখেছো।

যে মুহূর্তে তোমরা এই সব জঞ্জাল থেকে রাহু মুক্ত হবে, এগুলোর মোহ থেকে নিরাসক্ত হবে সেই মুহূর্ত থেকেই এই সব আপদ দূর হতে থাকবে, যেভাবে গাভীটা বন্ধনমুক্ত হয়ে ছুটছিল।“

তোমরা পৌঁছে যাবে ‘নফছে মুতমায়েন্না’র স্তরে।

“অমাল হায়াতুদ দুনিয়া ইল্লা মাতাউল গুরুর”- এবং দুনিয়ার জীবন হচ্ছে একটা প্রতারণা মাত্র। আল কোরান।

Categories: Uncategorized

0 Comments

Leave a Reply

Avatar placeholder

Your email address will not be published. Required fields are marked *