করোনার একটা বড়ো শিক্ষা হচ্ছে অক্ষমতা হাজির হওয়ার আগেই সচেতন হওয়া।
নইলে লজ্জিত ও অনুতপ্ত হতে হবে যদিও সে লজ্জা বা অনুতাপ কোনো কাজেই আসবে না।
আত্মাকে বিশুদ্ধ করে নেওয়া ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নাই দুনিয়ায় প্রশান্তি পেতে বা পরলোকে স্রষ্ঠাকে পেতে।
জান্নাতের কাঙাল হয় বোকারা। কাঙালতো হতে হবে স্রষ্ঠার জন্য। আমাকে যিনি সৃষ্টি করেছেন জান্নাতওতো তিনিই সৃষ্টি করেছেন। তাহলে তাঁর এক সৃষ্টি হয়ে অন্য সৃষ্টির জন্য কাঙাল হওয়া আহাম্মকি ছাড়া আর কিছুই না। স্রষ্টাকে পেলে জান্নাততো এমনিই পাওয়া যাবে।
আল্লাহর উপর ঈমান,নির্ভরতা,তাঁর একত্বে অবিচল আস্থা ও আমলের মধ্যেই এখলাস দ্বারা পরহেযগারী তৈরী হয়।
যে আত্মাকে শুদ্ধ করতে হবে সে তো দেহের খাঁচায় আবদ্ধ এক অচিন পাখী। কৌটায় ভরা মতি। সিন্দুকের অমূল্য সম্পদ। ক্ষমতাতো পাখির, খাঁচার না। দামীতো সম্পদ, সিন্দুক না।
সুস্বাদু-পুষ্টিকর খাবার, দামী সাবান-সুগন্ধি-পোশাক দিয়ে ফালতু খাঁচার যত্নে মত্ত আমরা। ভিতরে গুমরে কাঁদে প্রাণ-পাখী। সিরিয়ার মৃত্যুমুখী অসহায় বাচ্চাটার মতো বলে হয়তো,”আমি আল্লাহকে সব বলে দেব। “
সত্যি সে বলে দেবে। আমাদের প্রত্যেকটা অঙ্গ প্রত্যঙ্গ এক একটা গুপ্তচর। সব কিছু রেকর্ড করে রাখছে। মামলার তারিখে মহা-আদালতে বিচারকের সামনে সব তুলে ধরবে। এতো গোপন-অজানা কথা না।
সূরা ইয়াসীন-এ আল্লাহ বলেন,”আল ইয়াওমা নাখতেমু আলা আফওয়াহেহেম ওয়া তুকাল্লেমুনা আইদীহিম ওয়া তাশহাদু আরজুলুহুম বেমা কানু ইয়াকজেবুন। ” ওই দিন জিহ্বা সিলগালা করে বন্ধ করে দেওয়া হবে। হাত দুইটা কথা বলবে,পা দুইটা সাক্ষ্য দেবে যে অন্যায়, যে অপরাধ, যে সীমালঙ্ঘন করা হয়েছিল।
এর পরও আমরা ‘করোনার-চাল’ চুরি করি! খাবার মজুদ করি!!
করোনার চেয়েও কঠিন ওষুধ দরকার আমাদের? আমাদের স্নায়ূ অবশ হয়ে গেছে। কোনো আঘাতই আমাদের চমকাতে পারে না।
পম্পেইয়ের মতো গরম লাভায় চিরদিনের মতো ঢেকে দিলেই কি সাবধান হবো আমরা।
আর সে সাবধানে কি আসে যায় !
মনোজ মুরালী নায়ারের মন্দ্রিত সমর্পিত কণ্ঠে বেহালার কাঁন্নার সাথে বৈতালিকে শুনতে শুনতে লিখছিলাম।
“কোথায় আলো কোথায় ওরে আলো,
বিরহানলে জ্বালোরে ওরে জ্বালো।
রয়েছে দীপ না আছে শিখা
এই কি ভালে ছিল রে লিখা-
………………………………..
ডাকিছে মেঘ হাঁকিছে হওয়া,
সময় গেলে হবে না যাওয়া,
নিবিড় নিশা নিকষবন কালো,
পরাণ দিয়ে প্রেমের দীপ জ্বালো।”-রবীন্দ্রনাথ
0 Comments