প্রতিটা প্রোডাক্টের যেমন ‘প্রাইস ট্যাগ’ থাকে তেমনই তোমার আমারও ‘প্রাইস ট্যাগ’ আছে। তোমার যে মূল্য তুমি ভাবো, তার চেয়ে কি নিজের মূল্য আরও বাড়াতে চাও?
তাহলে এই চিন্তাগুল, অভ্যাসগুলো ঝেড়ে ফেলো হাঁস যেমন ডানা ঝেড়ে সব কাদা-পানি ছুঁড়ে ফেলে।
আমাদের অনেকেই নিজেদের মেধা এবং দক্ষতার অবমূল্যায়ন করি কিছু আত্ম-ধ্বংসকারী অভ্যাসের কারণে। অভ্যাস গুলো চরম পর্যায়ে গেলে তুমি নিজেই নিজের শত্রু হয়ে দাঁড়াও। নিজের প্রতি সামান্য অবিচার তোমাকে স্লো করে দিতে পারে এবং বিশাল সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে।
১। তুমি তোমার নিজের উপর বিশ্বাস রাখতে পারো না।
“আত্ম-কথন” বলে একটা কথা আছে যার অর্থ নিজের সাথে নিজেই কথা বলা। তুমি নিজেই যদি নিজের সাথে বলতে থাকো যে ‘আমার লিডার হওয়ার যোগ্যতা নাই’ ‘এতো ডিসিপ্লিনড হতে পারবো না’ ‘এই পরিবেশে বা প্রতিষ্ঠানে বা বসের সাথে কাজ করতে পারবো না’ তাহলে শিশুর মতো তোমার অবচেতন মন এই কথা বিশ্বাস করে তোমাকে আর পেশাজীবনে উন্নতি করতে দেবে না।
২। তুমি তোমার আপন “ইউনিক সত্ত্বা”র অধিকারী হও না।
অন্যের কাছ থেকে শেখা ভালো, তবে কোন অনুকরণ বা কপি করে না। যে গুণগুলো তোমাকে “তুমি হিসেবে” আলাদা করেছে সেই গুণ গুলোর দিকে যত্নের দৃষ্টি দাও ও তুমি নিজ যোগ্যতায় স্বতন্ত্র হয়ে ভিড়ের মধ্যেও দৃষ্টি আকর্ষণকারী হও।
৩। অন্যে কি ভাবে বা চিন্তা করে তা নিয়ে তুমি বেশী অস্থির।
মানব চরত্রের মৌলিক বাসনার একটা হচ্ছে অন্যের চোখে পছন্দনীয় ও সন্মানিত হতে চাওয়া। তাই বলে অন্যের চাহিদার বলি হয়ে তারা কিভাবে তোমাকে দেখতে চায় তুমি সেই ভাবে নিজেকে পরিবর্তিত করে ফেললে তোমার স্বাতন্ত্র্য বলে কিছুই রইলো না। নিজের ক্ষতি করে ফেলছ তুমি। তোমার জীবন অন্যের পছন্দ অনুযায়ী চালাতে যেয়ে নিজেকে খাটো করে ফেলো না।
৪। তুমি নিজেকে অন্যের সাথে তুলনা করো।
তোমার জীবনের নিষ্ঠুর বাস্ততা বিবেচনা করে যদি তুমি নিজেকে অন্যের সাথে তুলনা করো তাহলে নিজেকে অন্যের চেয়ে ছোটোই করা হবে। তুলনা যদি করতেই হয় তাহলে অন্যের যা নাই এবং যে কঠিন সংগ্রাম তারা করছে তার বিপরীতে তোমার যে সুযোগ, সৌভাগ্য ও অর্জন আছে তার জন্যে কৃতজ্ঞ হয়ে নিজের আশীর্বাদকে অন্যের সাথের শেয়ার করার জন্য মনস্থ করো।
৫। তোমার চারপাশ ‘নেগেটিভ’ মানুষ দ্বারা পরিবৃত
যারা কর্মক্ষেত্রে অন্যের সফলতা ও অন্যায্য জিনিস নিয়ে মগ্ন তাদের দিকে তাকাতে যেও না। আসলে তারা তাদের নিজেদের পরাজয়কে মুখোশ-আবৃত করে তোমার জীবনকে অস্থির করার পাঁয়তারা করছে। পজিটিভ মানুষ খোঁজো ও সম্পর্ক গড়তে সাবধানী হও।
৬। তুমি প্যাসিমিজমকে প্রশ্রয় দাও।
কি করতে পারবে না, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন না হয়ে বরং যা করতে পারো তা আরও সুন্দর, সুচারুরুপে করতে শুরু করো।
৭। তুমি নির্দয়ভাবে নিজের সমালোচনা করো।
আমাদের সবারই সীমাবদ্ধতা আছে এবং জীবনে যৎকিঞ্চিত সমালোচনার প্রয়োজন আছে। তুমি নিজের অক্ষমতাগুলো নিয়ে চিন্তা করে, নিজের ভুলগুলো নিয়ে নিরন্তর চিন্তা করে তোমার ভালো অর্জনগুলোকে ভাগ্যের দান হিসেবে ভেবে “নিজেকে ছোট” করছ। নিজের উপর এই নির্দয় আচরণ বন্ধ করো।
৮। তুমি তোমার নিজেকে বিশ্বাস করো না।
তোমার ইনটুইশানগুলো তোমার জন্মগত প্রতিভা বা অনেক বছরের অভিজ্ঞতা যেখান থেকে আসুক না কেন এটা তখনই কাজ করবে যখন এর উপর তোমার অগাধ বিশ্বাস থাকবে।
নিজের উপর এই বিশ্বাস অটল রাখো।
৯। তুমি তোমার নিজেকে কথা বলাও না।
যখন তুমি তোমার কণ্ঠ দমন করে রাখো- কি করতে চাও বা কি তুমি চাও তা না বলো অন্যেরা ভুল করে তোমার নীরবতাকে অজ্ঞতা বা উদাসিন্য হিসেবে বিবেচনা করবে। সুতরাং স্পষ্ট করে উচ্চারণ করো তোমার চাওয়া ও চিন্তা।
১০। তুমি মোটেই কিউরিয়াস বা কৌতূহলী না।
কৌতূহল আমাদের বিশাল বা মহান অর্জনের অণুঘটক, অন্যদিকে এটাকে অবদমিত করে রাখলে প্রকারন্তরে তুমি নিজেকে নিজেই পিছনে টেনে নামাচ্ছ।
১১। তুমি কমপ্লিমেন্ট/ প্রশংসা/ অভিনন্দন গুলোকে ডিসমিস করে দাও।
অন্যের প্রশংসাকে যখন তুমি হালকা হেসে উড়ায়ে দাও তখন তুমি কেবল নিজেকেই ছোট করছ না অন্যদিকে প্রশংসাকারীর প্রশংসাকেও চ্যালেঞ্জ করে বস, যেন মানুষটা তোমার প্রশংসা করে ভুল বা অন্যায় করে ফেলেছে। কারো স্বতঃস্ফূর্ত প্রশংসা তোমাকে ইগোইষ্টিক করে না।
১২। তুমি তোমার নিজেকে সীমিত করে ফেলো।
যখন সফলতার জন্যে নিজেকে অযোগ্য বা অনুপযুক্ত ভাবা শুরু করো তখন ঐ কাজটা করার চেষ্টাও তুমি করো না।
নিজেকে সবচেয়ে বড় যে উপহার তুমি দিতে পারো তা হচ্ছেঃ তোমার স্বপ্ন, কল্পনা, চিন্তা, উচ্চাকাংখাকে দিগদিগন্তে অবারিত করে দেয়া।
0 Comments