আপনি কর্পোরেট জগতে কাজ করতে যেয়ে মনে রাখবেন প্রতিষ্ঠান যেমন তার লক্ষ্যে পৌছনোর জন্য কিছু পদক্ষেপ মাথায় রেখে কাজ করে আপনাকেও তেমনই কিছু পদক্ষেপ মাথায় রেখে পেশাজীবনে সফলতার পথে এগুতে হবে।

মনে রাখবেন, প্রতিষ্ঠানের জন্য একটা মাস, বৎসর নিষ্ফলা বা মুনাফাহীন হলে কিছুই যায় আসে না কারণ প্রতিষ্ঠান প্রজন্ম, প্রজন্মন্তরের জন্য তৈরি হয়।আপনার জীবনের লক্ষ্য আপনাকেই অর্জন করে ইনিংস ঘোষণা করতে হবে।আপনার ছেলে মেয়ে করলে হবে না। ওটা হবে ওদের অর্জন, আপনার না। আপনি বড়জোর গর্বিত পিতা মাতা হিসেবে প্রশান্তি লাভ করতে পারেন, আত্মপ্রসাদ লাভ করতে পারেন।

প্রতিষ্ঠানের Chief Financial Officer (CFO) কতকগুলো মেজারিং স্কেলে প্রতিষ্ঠানের গতিপথ পরিচালনা করেন। তিনি যেভাবে প্রতিষ্ঠানকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যান, আপনিও সেই পথ পদ্ধতি অনুসরন করলে আপনার জীবনকে আপনার স্বপ্নের পথে এগূবে।

কোন একটা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব নেওয়ার পর একজন CFO প্রাথমিকভাবে নীচের কাজগুলো করেনঃ

১। Surviveঃ একজন CFO কোন প্রতিষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রতিষ্ঠানটার অবস্থা পর্যালোচনা করেন। তাঁর প্রথম লক্ষ্য হয় প্রতিষ্ঠানটিকে টিকায়ে রাখা। যে অবস্থায় আছে সেই অবস্থায় যে ব্যবস্থা নিলে প্রতিষ্ঠানটা আর নীচের দিকে নামবে না তাই করা।

আর একটা উদাহরণ দিয়ে বলা যায়, হাসপাতালের ইমারজেন্সিতে দুর্ঘটনার রুগী আসলে ডাক্তার তাকে এক ব্যাগ রক্ত, স্যালাইন, হাইড্রোকর্টিসোন ও জীবাণুনাশক ইঞ্জেকশান দেন সবার আগে। হাত, পা ভেঙ্গে ঝুলে থাকলেও তিনি ওগুলোর চিকিৎসা নিয়ে মাথা ঘামান না। তাঁর মাথা ব্যাথা রুগীর জীবন বাঁচানো নিয়ে। অন্যগুলোর চিকিৎসা রুগীর জীবন বাচলে একটু পরেও করা যাবে।

CFO’ও তাই করেন। আপনিও পেশাজীবনে প্রথমে টিকে থাকার লড়াইটা চালিয়ে যান।

২। Avoid Bankruptcyঃ CFO এর পর প্রতিষ্ঠানটিকে দেউলিয়া হওয়া থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। আপনিও পেশাজীবনের দেউলিয়া হওয়া থেকে বাঁচুন।এই দেউলিয়া টাকা পয়সার দেউলিয়া না। আপনার জ্ঞান, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা। শুধু কাজের না, প্রতিষ্ঠান ও সমগ্র ইন্ডাস্ট্রির জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা আপনাকে অর্জন করতে হবে। এক্ষেত্রে দেউলিয়া হলে ক্যারিয়ার বনসাই হয়ে যাবে।

৩। Beat Competitionঃ CFO এর পর প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানকে প্রতিযোগীতায় পিছনে ফেলার জন্য প্রোকিওরমেন্ট থেকে শুরু করে ফ্যাক্টরি হয়ে ইন হাউজ ও সেলস মার্কেটিং নিয়ে কাজ শুরু করেন।

আপনার প্রতিযোগিতা নিজের প্রতিষ্ঠানের ও মার্কেটের একই ইন্ডাস্ট্রির অন্যান্য সহকর্মীদের সাথে। সবাইকে প্রতিযোগীতায় পিছনে ফেলে আপনাকে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।

৪। Maximize Market Share (MS)ঃ CFO এর পর নজর দেন ধীরে ধীরে মার্কেটে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করতে এবং কাঙ্ক্ষিত Market Share অর্জন করতে। আপনিও আপনার শক্তি ও দুর্বলতা অনুযায়ী আপনার মার্কেটে আপনার অর্জন ও অবস্থান ধীরে ধীরে বাড়াতে থাকুন।আপনার ইন্ডাস্ট্রির কোন দক্ষ কর্মকর্তার নাম নিতে হলে জেনো আপনার নামটাই সবার আগে, সবার ঠোটের মাথায় থাকে।

৫। Minimize Costঃ CFO এবার খরচ কমানোর জায়গাগূলো পিনপয়েন্ট করে প্রোগ্রাম নিবেন খরচ কমাতে। আপনার বেলায় শুধু অর্থনৈতিক খরচ না আরও কিছু খরচের দিকে নজর দিতে হবে যেমনঃ আগে যে সময়, মেধা ও শক্তি খরচ করে যে কাজ করতেন এখন চেষ্টা করেন প্রতিটা কাজ কম সময়, মেধা ও শক্তি খরচ করে করতে। বেঁচে যাওয়া সময়ে অন্য কোন কাজ করতে পারবেন যেমন, পড়াশুনা, কোন ডিগ্রী নেওয়া বা কোন দক্ষতার প্রশিক্ষণ নেওয়া।

৬। Maximize Profitঃ CFO এবার নজর দেন কাঙ্ক্ষিত মুনাফা অর্জনের। আগের স্টেপ গুলো ঠিক মতো হলে, যেমন Beat Competition, Maximize Market Share (MS), Minimize Cost, মুনাফা এমনিতেই ঘরে আসবে। আপনি আপনার জীবন এই ছাঁচে গড়তে পারলে আপনার জীবনের মুনাফা বা পেশা জীবনের উন্নতি এমনিতেই হবে।

৭। Maintain a Steady Earnings GrowthঃCFO’র এর পরের কাজ হচ্ছে ক্রমাগত উপার্জনের ঊর্ধ্বগতি ধরে রাখা।

নিজের জীবনে একজন CFO’র মতো কাজ করতে পারলে জীবনের পরবর্তী বৎসর গুলোতে চাকরী, উপার্জন, কর্পোরেট পলিটিক্স, স্বপ্নের পদ-পদবী, নিজের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবন কোথাও হতাশা আসার সম্ভাবনা নাই একমাত্র দুর্ঘটনা ছাড়া।

Categories: Uncategorized

0 Comments

Leave a Reply

Avatar placeholder

Your email address will not be published. Required fields are marked *