ইবলীসের নামকরণ:
তখন পৃথিবী জীন জাতির বসবাসের উপযুক্ত ছিল। বিগ-ব্যাং-এর পর সুদীর্ঘকাল ধরে পৃথিবী প্রাণীর বসবাসের উপযুক্ত হতে থাকে। যেহেতু জীনেরা আগুনের তৈরী সেই জন্য উত্তপ্ত ধরা তাদের বসবাসের যোগ্য ছিল।
কিন্তু জীনেরা স্রষ্টার ইবাদতে মগ্ন না থেকে নানা উৎপাত উপদ্রবে মশগুল থাকায় আল্লাহ তাদেরকেও ধ্বংস করতে চাইলেন। ১৭,৭,৯৯ সৃষ্ট মাখলুকাতের একটা ছিল জীনেরা। সমগ্র পৃথিবীতে অবশিষ্ঠ ছিল এক সন্তান, তার নাম ‘আজাজীল।’
আজাজিলকে ফেরেশতারা সাথে করে নিয়ে যায়। সাত লক্ষ বৎসর কঠিন তপস্যা করে আজাজিল নিজেকে স্রষ্টার সুদৃষ্টিতে নিয়ে আসে। পারফরমেন্স-এ খুশী হয়ে আল্লাহ তাকে সম্মানিত করে প্রমোশন দিয়ে ফেরেস্তাদের ‘মুয়াল্লেম’ হিসেবে নিয়োগ দেন। পরের ইতিহাস আমরা সবাই জানি।
“উসজুদু লে আদামা, ফাসাজুদু ইল্লা ইবলিস। আবা অস্তাগবারা, ও কানা মিনাল কাফেরিন- সূরা বাকারা।
আদমকে সেজদা করতে আদেশ করলে সবাই সেজদা করলো ইবলিশ ছাড়া। সে অস্বীকার করলো ও কাফেরদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেলো।
মস্তকের জ্ঞানে জ্ঞানী আজাজীল আদম (আঃ) কে সেজদা করতে অস্বীকার করে ধৃষ্ঠতা দেখায়। আজাজিল বিতাড়িত হয়ে ‘ইবলিস’-এ রূপান্তরিত হয়ে হন্যে হয়ে ঘুরছে আজো।
সমস্যাটা কোথায় ছিল? ঘিলুর জ্ঞানে জ্ঞানী আজাজিলের সিনার জ্ঞান বা রুহানি জ্ঞান ও আদব ছিল না। ঘিলুর জ্ঞান উদ্ধত করে , দুর্বিনীত করে, অহংকারী করে, দেমাগী করে। অন্যদিকে সিনার জ্ঞান বা ‘ইলমে লাদুন্নী’ মাথা নত করতে শেখায়, বিনীত করে, নিরাভরণ করে, নির্লোভ করে, ফলভারানত শাখা নিয়ে মাটির সমান্তরালে এসে ঘোষণা করে, “মোর নাম এই বলে খ্যাত হোক, আমি তোমাদেরই লোক, এই হোক মোর শেষ পরিচয়।”
নেতৃত্বের আসনে বসে যদি একটু ঘিলুর জ্ঞান থেকে সরে এসে সিনার জ্ঞানের চর্চা করা যেত তাহলে অনেক প্রতিষ্ঠানেই কর্ম পরিবেশের প্রভূত উন্নতি হতো। প্রতিষ্ঠানের সাথে সাথে মানুষগুলোরও উন্নতি হতো। মানুষ কাজকে অন্তর দিয়ে ভালোবাসতো এবং উপভোগ করতো। পারিবারিক,সামাজিক ও পেশাজীবন সমান্তরালে সুখ ও শান্তিতে মুখরিত হতো। তৈরী হতো পরবর্তী প্রজন্মের নেতৃত্ব। অসহায় জীন শিশু না। আজাজিল থেকে ইবলিস না।
0 Comments