দৈহিক বিচ্যুতির উপর মানবাত্মার বিজয় উল্লাসের অসামান্য উদাহরণ হচ্ছে হেলেন কিলার এর জীবনী। তার মৃত্যুর এতদিন পরেও তার জীবনী আশার আলোকবর্তিকা হয়ে পথ দেখাবে নিয়ত সংগ্রামী মানুষগুলোকে।

মাত্র ১৯ মাস বয়সে দৃষ্টি এবং শ্রবণ শক্তি হারানো এই মহীয়সী নারীর সংগ্রামের কাহিনী The story of my life নামে তার autobiography-তে বিধৃত আছে। সাত বৎসর বয়সে ৬০টি সাংকেতিক চিহ্ন দিয়ে সব যোগাযোগ ও ভাবের আদান প্রদান করতে হতো তাকে। জুতোর শব্দ শুনে বলে দিতে পারতেন কে হেটে গেলো। তার গভর্নেস সুলিভান “মগ ” এর সাংকেতিক শব্দ শেখাতে গেলে হতাশ হেলেন মগটাই ভেঙে ফেলেন। নিজে ভেঙে পড়েন নি। দ্বিগুন উৎসাহে লেগে পড়েছেন।

কঠিন ব্রতের সাধনায় ডিগ্রী অর্জন করেছেন। হয়েছেন লেখিকা , রাজনৈতিক কর্মী, লেকচারার। সাকার দেহের অসম্পূর্ণতাকে নিরাকার মনের তীব্র দহনে ভষ্মীভুত করেছেন। জীবনের বাধাই শুধু লঙ্ঘন নাই, সমাজকে দিয়েও গেছেন।

যখন তোমার মনে হবে নিয়তি তোমার প্রতি সুপ্রসন্ন হয় নি, তখন তোমার অবশ্য করণীয় হচ্ছে তোমার চতুর্পাশে একবার অন্তর মেলে দেখা এবং কৃতজ্ঞ হওয়া যে তুমি কত ভাগ্যবান। জীবনের পরিকল্পনার একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ রেখো সমাজকে কিছু ফিরিয়ে দিতে। কোনো প্রত্যাশা না করে। একবার ভেবে দেখো শতকরা কতজন মানুষের মধ্যে পড়ো তুমি। সমাজের কত মানুষে ঘামের ঘ্রাণ তোমার তুমিতে লীন হয়ে আছে।

শুধু টাকাই না, একটু সময়, একটু সহযোগীতা তোমার সমাজের সাথে সম্পৃক্ততার উৎকৃষ্ট উদাহরণ হতে পারে। মানব কল্যানে জীবনকে শরীক করার অনাবিল আনন্দ তোমাকে উৎফুল্ল করে তুলবে। জীবনের সমস্ত বাধা, বিপত্তি, বেদনায় গেয়ে ওঠো,

“এই করেছো ভালো নিঠুর হে,

এই করেছো ভালো

এমনি করে হৃদয়ে মোর তীব্র দহন জ্বালো

নিঠুর হে, এই করেছো ভালো “

“তীব্র দহন”-ই তোমাকে অভীষ্ট লক্ষে পৌছে দেবে, রকেট যেভাবে মধ্যাকর্ষণ ছিন্ন করে পৌঁছায় চাঁদে,মঙ্গলে।

নজর-ই-জিলানী

লালমাটিয়া

ঢাকা


0 Comments

Leave a Reply

Avatar placeholder

Your email address will not be published. Required fields are marked *