সম্ভবতঃ সবচেয়ে খারাপ যা তোমার জীবনে ঘটতে পারে তা হচ্ছে যদি তুমি প্রবাদতুল্য “সোনার চামচ” মুখে নিয়ে জন্মগ্রহণ করো। কারণ তুমি “বিশেষ সুযোগ ” নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছো।
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম উপহার থেকে তুমি বঞ্চিত হতে পারো,আর তা হলো, তোমার সর্বোচ্চ সক্ষমতা দিয়ে সাফল্যের চূড়ায় উঠা। কারণ দুনিয়াবী প্রয়োজনের অধিকাংশ উপাচার নিয়েই তুমি জন্মেছ। নিজেকে, নিজের যোগ্যতা, নিজের সক্ষমতা যাচাইয়ের কোনো সুযোগইতো তুমি পেলে না।
বাবা বা মা’এর থেকে উত্তরাধিকার হিসেবে পেয়ে যদি আনন্দে আত্মহারা হও, নিজের প্রচেষ্টায় কিছু করার চেষ্টা না করো তাহলে উত্তরাধিকার হিসেবে যে ১০০ বিলিয়ন নিউরোন নিয়ে জন্মেছিলে তার একাংশের বিশেষ ব্যবহার থেকে তুমি বঞ্চিত থাকবে। নিজের মেরুদন্ড আর আত্মবিশ্বাস বলে কিছু তৈরী হবে না। জীবন একঘেয়ে পরগাছার মতো মনে হবে।
যদি তুমি কিছু কম নিয়ে পৃথিবীতে আগমন করে থাকো, যারা বেশি পেয়ে জম্মগ্রহণ করেছে তাদেরকে অবজ্ঞা করো না বা বিরক্ত হয়োনা।
সত্যিকার অর্থে সঠিক সুযোগের উত্তরিধিকারী তো তুমি, কারণ জীবনের কঠিন বাস্তবতা কে মোকাবেলা করে নিজ যোগ্যতায় যে অবিচল আত্মবিশ্বাস তুমি অর্জন করবে তার উপরভিত্তি করে সারাটা জীবন তুমি নানা চড়াই -উৎরাই ডিঙ্গায়ে আনন্দে জীবনটাকে উপভোগ করবে।
জীবনের পথে যত এগোতে থাকবে, টেকসই সাফল্যের জন্য যে শক্তি ও জ্ঞান প্রয়োজন তা শুধু অর্জন সম্ভব “সোনার চামচ” মুখে না নিয়ে জন্মানোতে।
অদৃশ্য যে ১০০ বিলিয়ন নিউরোন এর মতো অমূল্য সম্পদ সেটাতো “সোনার চামচ” ও পেয়েছে আর তুমিও পেয়েছো। বরং তোমাকে একটু বেশি দেয়া হয়েছে, সেটা হলো তোমার যোগ্যতার প্রমাণ দেওয়ার জন্য সংগ্রাম মুখর জীবন।
আর্নেস্ট হেমিংওয়ে The old man and the sea উপন্যাসে বলেছেন, “man may be destroyed but not defeated.” মানুষ ধ্বংস হতে পারে কিন্তু পরাজিত হতে পারে না।
এই সৌভাগ্যের জন্য কৃতজ্ঞ হও।
জীবনের শেষের দিকে রোগশয্যায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন:
“সত্য যে কঠিন ,
কঠিনেরে ভালবাসিলাম
সে কখনো করে বঞ্চনা।”
নজর-ই-জিলানী
লালমাটিয়া
ঢাকা।
0 Comments