বৌদ্ধ মতে আত্মার ভ্রমণ:
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা Soul বা আত্মায় বিশ্বাস করে না। তাঁরা বিশ্বাস করেন Continuity of Conscious Experience-এ।
মহাযান, হীন-যান, বজ্রযান বা নির্বাণ লাভের জন্য অতি আবশ্যকীয় Zazen Meditation-এ বিশ্বাসী চৈনিক Zen Buddhism সহ বৌদ্ধ ধর্মের সকল শাখাই ধ্যান-এর একপর্যায়ে এসে আত্মার ব্যাপারে নিঃশ্চুপ।
কোশল দেশে এক সামন্ত ছিলেন, রাজন্য পায়াসী। তাঁর মতে, “ইহলোক পরলোক কিছুই নেই। মৃত্যুর পর জীবের নবজন্ম হয় না এবং ভালো মন্দ কর্মেরও কোনো ফলাফল নাই।” (দীঘনিকায় ১/১২)
রাজন্য পায়াসী তাঁর এই অভিমতের ৩ টি কারণ বুদ্ধ শিষ্য কুমার কশ্যপের কাছে তুলে ধরেন: ১)মৃত ব্যাক্তি ফিরে এসে বলেনি যে পরলোক আছে। ২) ধর্মাত্মা, আস্তিক ব্যাক্তি,যাঁদের স্বর্গলাভ নিশ্চিন্ত, তারাও মরতে চান না। ৩) মৃতদেহের ওজন কম হয় না কিন্তু তার আত্মা দেহ থেকে বের হয়ে গেছে এবং কেউই আত্মাকে শরীর থেকে বের হতে দেখে না।
মহামতি বুদ্ধ বলেন,” এই-ই আত্মা, এই-ই শরীর, উভয়েই এক -এরূপ হওয়ার পর আর ব্রম্মচর্যবাস সম্ভব নয়, আত্মা ও শরীর পৃথক মনে হলেও নয়। “
মানুষ এবং অন্যান্য জীবিত প্রাণীর ব্যাপারে বৌদ্ধ দর্শণ মনে করে একান্ত গভীরে আত্মা বা শাশ্বত কোনো কিছু নেই। প্রাথমিক দিন থেকেই বৌদ্ধ ধর্ম philosophical and ontological text-এ আত্মার অস্তিত্ত্ব অস্বীকার করে এসেছে।
আবার কোনো কোনো বৌদ্ধধর্মাবলম্বীরা মনে করেন গর্ভ ধারণের সঙ্গে সঙ্গে আত্মার সংযুক্তি ঘটে। গর্ভ ধরণের ৪৯ দিনের মাথায় মাতৃ গর্ভে আত্মার আগমন ঘটে এমন এমনটাও কোনো কোনো বৌদ্ধ অনুসারীরা বিশ্বাস করেন। নিদ্দিষ্ট কাল মাতৃ গর্ভে অতিক্রান্ত হলে শিশু ভূমিষ্ঠ হয়। এই হলো আত্মার জগৎ থেকে সৃষ্টির জগতে আত্মার ভ্রমণের প্রাথমিক ধারণা। (চলবে )
0 Comments