ভালবাসা ব্যাপারটার সম্পর্ক অন্তরের সাথে, বকর বকর করে তা প্রমাণ করার না। এটা তৈরি হয় নীরবে, নিভৃতে, আসর জমায়ে না।
আল্লাহকে ভালবাসলে, আল্লাহকে বন্ধু মনে করলে, তাঁর জন্যই কাজ করতে হবে, তাঁকেই ভয় করতে হবে। জনে জনে বলে বা ঘোষণা করে বেড়ায়ে কোন লাভ নেই।
ইংরেজিতে Reverence বলে একটা শব্দ আছে যার অর্থ সম্ভ্রম-মিশ্রিত মুগ্ধতা, ভয় ও ভালবাসা। আল্লাহ্কেও সেই অনুভূতি নিয়ে ভালবাসতে হবে।
একবার সেই মহাশক্তিধরকে আশ্রয় হিসেবে গ্রহণ করার পর মনে ভিন্ন কোন চিন্তা আনা মহাপাপ। আল্লাহও এ ক্ষেত্রে শিশুদের মতো, অন্য কাউকে অংশীদার করলে, তাঁর চেয়ে বেশী ভালবাসলে তিনি অসম্ভব রুষ্ট হন, ক্ষুব্ধ হন।
যদি তাওহিদ থাকে ঠোটের বারান্দায় তো শিরক থাকে অন্তরের অন্তঃস্থলে। এটাই মুনাফেকি। এটাই করে চলছি অহোরাত্রি । জিহবায় সুবহানাল্লাহ বললেও অন্তরে মতান্তরের মরু সাইমুম!
এ জন্যই আল্লাহ্ বলেন,”হে বনি আদম ! আমার তরফ থেকে তো তোমাদের কাছে ভালো জিনিস পৌঁছে, অথচ তোমাদের তরফ থেকে আমার কাছে পৌঁছে মন্দ জিনিস!”
আল্লাহ্র বান্দা বলে মুখে দাবী করে অন্যের আনুগত্য করলে, অন্যকে সাফল্যদাতা মনে করলে কামিয়াবি হওয়া যায় না। যথার্থ মুমিন নিজ নফস, শয়তান ও খাহেশের তাবেদারি করে না ।
যথার্থ মুমিন দুনিয়াবি বিষয়ে বেপরোয়া হয়। কখনও অন্যায়ের সাথে আপোষ করে না। কারণ সে বিশ্বাস করে,”কুলিল্লাহ হুম্মা মালিকিল মূলক, তু’তিল মূলক মান্তাসাউ, অয়া তাঞ্জেউল মূলক মান তাসাউ…।“ সুরা আল ইমরান আয়াত-২৬। অর্থাৎ,বলুন, ইয়া আল্লাহ্! তুমিই সার্বভৌম শক্তির অধিকারী। তুমি যাকে ইচ্ছা রাজ্য দান করো এবং যার কাছ থেকে ইচ্ছা রাজ্য ছিনিয়ে নাও।
আর এমন অন্যায়ের সাথে আপোষহীন মুমিন ব্যাক্তির সম্পূর্ণ দায়িত্ব আল্লাহ্ নিজ হাতে নিয়ে নেন। শুধু প্রয়োজন একাগ্রতার সাথে, নিষ্ঠার সাথে, সবর করে কাজ করে যাওয়া। ফল অবশ্যই সঠিক সময়ে হাজির হবে। নিবেদন একমাত্র আল্লাহ্র প্রতি শর্তহীন নিখাদ ভালবাসা।
সবার উপরে থাকবে সেই মহামহিমের প্রতি আত্মসমর্পণ ও হেদায়েত পাওয়ার আকুল আকুতি।
“আরুপ তোমার বাণী,
অঙ্গে আমার চিত্তে আমার মুক্তি দিক সে আনি।
নিত্য কালের উৎসব তব বিশ্বের দীপালিকা-
আমি শুধু তাঁর মাটির প্রদীপ, জ্বালাও তাহার শিখা
নির্বাণহীন আলোকদীপ্ত তোমার ইচ্ছাখানি।“
0 Comments