Verily never
Will God change the condition
Of a people until they
Change it themselves
(With their own souls).
But when (once) God willeth
A people’s punishment,
There can be no
Turning it back,nor
Will they find beside’s Him,
Any to protect -সূরা রা’দ,আয়াত-১১।

ক্ষুদ্রার্থে এই আয়াতের তফসীর এভাবে করা হয় যে “কোনো জাতি কর্ম-বিমুখ থাকলে আল্লাহ তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করেন না।” অর্থাৎ কর্মে নিয়োজিত হলে নসিব আল্লাহ পরিবর্তিত করে দিবেন। বিষয়টা আসলে তা না। ব্যাপকার্থে তফসীর হবে আধ্যাত্মিক সংস্কার।

গোমরাহী করে কোনো সম্প্রদায় যখন আল্লাহর নেয়ামতের কৃতজ্ঞতা ও আনুগত্য ত্যাগ করে কুকর্ম , কুচরিত্র ও অবাধ্যতার পথ বেছে নেয়, তখন আল্লাহও স্বীয় রক্ষামূলক পাহারা উঠিয়ে নেন। আল্লাহর গজব ও আযাব তাদের উপর নেমে আসে। আত্ম-রক্ষার কোনো উপায় থাকে না।

আল্লাহর দেখানো পথে ফিরে আসলেই কেবল আল্লাহ তাদের তকদিরের পরিবর্তন করেন। আল্লাহ কাউকে শাস্তি দিতে চান না। তিনি মানুষকে সদ্গুণ দিয়ে পবিত্র করে সৃষ্টি করেছেন। মানুষকে বুদ্ধি ও জ্ঞান দিয়েছেন। তাঁর দয়া ও অনুগ্রহ দিয়ে মানুষকে ঘিরে রেখেছেন।

এতদসত্ত্বেও মানুষ যদি আল্লাহর ইচ্ছার বাইরে চলে যায় এবং স্বচেতন হয়ে আল্লাহর কাছে ফিরে আসতে চাইলে আল্লাহর মাগফেরাত তার জন্যে রয়েছে।

এইটা একমাত্র তখনই যখন মানুষ অবাধ্য হয়ে যায় ও ফিরে আসতে চায় না তখন আল্লাহর গজব তাকে ঘিরে ধরে। আর একবার এই গজব চলে আসলে তা রদ করার কেউ নেই।

আল্লাহ কোনো সম্প্রদায়ের অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ স্বয়ং তারাই নিজেদের অবস্থা ও কাজকর্ম মন্দ ও অশান্তিতে পরিবর্তিত করে না নেয়। মানুষ যখন নিজেদের অবস্থা অবাধ্যতা ও নাফরমানীতে পরিবর্তিত করে নেয়, তখন আল্লাহ্তায়ালাও স্বীয় কর্মপন্থা পরিবর্তিত করে দেন। যখন আল্লাতায়ালাই কাউকে আযাব দিতে চান, তখন কেউ তা রদ করতে পারে না এবং আল্লাহর নির্দেশের বিপরীতে তার সাহায্যার্থে কেউ এগিয়ে আসতে পারে না।

সহী বুখারী বর্ণনা মতে :মানুষের হেফাজতের জন্য ফেরেশতাদের দুইটি দল নিযুক্ত আছে। ফজরের নামাজের পর রাতের ফেরেশতা দল বিদায় নেয় এবং দিনের ফেরেশতা দল দায়িত্ব বুঝে নেন। আসরের নামাজের পর তাঁরা রাতের ফেরেশতাদের কাছে দায়িত্ব বুঝায়ে দিয়ে বিদায় নেন।

তবে আল্লাহ যখন কোনো মানুষের উপর আজাব বা গজব নাজিল করতে চান তখন হেফাজতকারী ফেরেশতারা দূরে সরে যান।
হেফাজতকারী ফেরেশতারা শুধুই পার্থিব না, পাপ থেকে বাঁচিয়ে মানুষের পারলৌকিক হেফাজতও করতে চান। এরপরও যদি মানুষ ফেরেশতার প্রেরণার প্রতি উদাসীন হয়ে পাপ কাজে লিপ্ত হয় তখন ফেরেশতারা দোআ ও চেষ্টা করে যাতে সে শীঘ্র তাওবা করে পাক হয়ে যায়। কোনরকমেই যখন সে হুশিয়ার না হয় তখনই তার আমলনামায় গোনাহ লিখা হয়।

হজরত কা’ব আহবার বলেন, মানুষের উপর থেকে খোদায়ী হেফাজত তুলে দিলে দুষ্ট জিনদের অত্যাচারে মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে যাবে। ততক্ষন রক্ষা-মূলক পাহারা কার্যকর থাকে, যতক্ষণ ‘তকদিরে-ইলাহী’ মানুষের হেফাজতের অনুমতি দেয়। আল্লাহ বিপদে জড়িত করতে চাইলে রক্ষা-মূলক পাহারা নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়।

ইমাম কুরতুবী’র মতে এই তফসীর থেকে নিম্নোক্ত উত্তর পাওয়া যায়: অন্যদের দুর্নীতি রুদ্ধ করতে না পারলে সমগ্র সম্প্রদায়ের উপর গজব নাজিল হওয়ার সমূহ সম্ভবনা থাকে। সাধরণ জনগণকে পথ দেখানোর দায়িত্ত্ব যাদের তাদের দিকে ইঙ্গিত করে সংশোধন করার কথা বলা হয়েছে। অন্যথায় পাপী এবং পুণ্যবান সবাই তখন আল্লাহর গজবের খোরাক হয়ে যায়।

আমরা জানি সত্য ও সুন্দরের পথ থেকে আমরা কত দূরে চলে এসেছি। এহেন শরীয়তের সীমা নাই যা আমরা লঙ্ঘন করি নাই। গুটি বসন্ত, কলেরার মতো মহামারী দেশ মহাদেশ উজাড় করেছে। শান্ত মাটি অশান্ত হলে কি হয় ইতালির পম্পেই নগরী, হাইতি তার সাক্ষী। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের লোকেরা লিখবে সার্চ, করোনা ভাইরাসের মতো মহামারীর ধ্বংসযজ্ঞের কথা।

পরিবর্তন বলতে অন্যায় থেকে সরে এসে সত্য ও ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত হওয়া বুঝায়। এই একটা পথই খোলা আছে সামনে। সব ভেদাভেদ ভুলে, অনিয়ম, অনাচার, ভুলে নতুন সমাজ বিনির্মাণই হতে পারে মুক্তির সহজ পথ।

ক্ষুদ্র স্বার্থে কোরানের তফসির না করে এর মর্মার্থের দিকে দৃষ্টি দিয়ে আমূল শুদ্ধিই হতে পারে কল্যানের মোক্ষম মাধ্যম।

“অন্তর মম বিকশিত করো অন্তরতর হে-
নির্মল করো, উজ্জ্বল করো,সুন্দর করো হে।
মঙ্গল করো,নিরলস নিঃসংশয় করো হে-
যুক্ত করো হে সবার সঙ্গে, মুক্ত করো হে বন্ধ
সঞ্চার করো সকল কর্মে শান্ত তোমার ছন্দ।”

এটাই হউক আমাদের ব্যাক্তি জীবন, সামাজিক জীবন,রাষ্ট্রীয় জীবন তথা সর্বত্র জীবনাচারের আকুতি।

করোনা ভাইরাস আমাদেরকে সতর্ক করতে এসেছে। আমরা যেন সুযোগটা হাত ছাড়া না করি। সে শিক্ষাটা নিতে ভুলে না যাই।

Categories: Uncategorized

2 Comments

Md Suzahul Haque Mia Foysal · April 1, 2020 at 6:18 pm

Great writing sir. We should follow this guidelines for our better life. We will follow your great writing inshallah. May almighty Allah bless you..

    admin · May 6, 2020 at 10:57 am

    Foysal, thank you very much.

Leave a Reply

Avatar placeholder

Your email address will not be published. Required fields are marked *