মানব জাতির আদি পিতা হজরত আদম (আঃ) শুধুই আগুন পানি মাটি বাতাসের তৈরী ছিলেন না। আব, আতশ, খাক, ও বাত, ‘রূহ’ এবং নূরে মোহাম্মদী এই ৬ প্রকারের উপাদানের সমন্বয়ে যে এক অতুলনীয় আদম তৈরী হয় তা মাথার জ্ঞান ও পদাধিকার বলে উপলব্ধি করা সম্ভব নয়।

দৃশ্যমান উপাদানে আদম (আঃ) কে সৃষ্টি করার পরে আল্লাহ তাঁর দেহে রূহ ফুঁৎকার করে দেন। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন,”ওয়া নাফাকতু ফীহি মীর রুহী “-অর্থাৎ আমার রূহ হতে উহার ভিতর রূহ ফুঁকিয়াছি।

ফুৎকারের পর আদম (আঃ)-এর মাটির দেহ থেকে রূহ প্রথমবার ফিরে আসে। দ্বিতীয়বারও ফিরে আসে। এর পর আল্লাহ আদম (আঃ)-এর দেহ থেকে ফিরে আসার কারণ জানতে চাইলে রূহ উত্তরে বলে, “অন্ধকারে থাকবো কিভাবে, তাই ফিরে আসি।” এইবার হজরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর নূর থেকে আদমের শরীরে পরশ বুলায়ে দেওয়ার পর রূহ আর ফিরে আসলো না। হজরত আদম (আঃ) এর চেতনা আসে এবং হাঁচি দিয়ে “আলহামদুলিল্লাহ” বলে ওঠেন।

উপরের আলোচনা থেকে বুঝা গেলো যে হজরত আদম (আঃ) শুধু আগুন পানি মাটি বাতাসের তৈরী না। এর পরতে পরতে মিশে আছে স্বয়ং আল্লাহর ফুঁকে দেওয়া রূহ। আদম (আঃ) তো আল্লার প্রতিনিধি। হাদিস-এ কুদসীতে এসেছে,”ইন্নাল্লাহা খালাকা আদামা আলা সুরতীহি “- নিশ্চয়ই আদমকে আমি নিজ সূরাতে তৈরী করেছি। “

শরীরের ৪ প্রকারের উপাদান, ফুঁকে দেওয়া রূহ এবং মহানবী (সাঃ)-এর নূরের পরশে আদম (আঃ) চৈতন্যময় আদম (আঃ)-এ রূপান্তরিত হন ।

ইবলিশের সেজদা করতে অস্বীকার করার অর্থ আল্লাকে অসম্মান করা,মহানবী (সাঃ)-কে অসম্মান করা। এহেন ধৃষ্টতার শাস্তি হিসেবে ইবলিশকে বেহেশ্ত থেকে বহিষ্কার করা ও জাহান্নামী ঘোষণা করা ইবলিশের কৃতকর্মের প্রায়শ্চিত্ত মাত্র।

আল্লাহর আদেশ অনুধাবন করা এবং সে অনুযায়ী কাজ করার জন্য দরকার রুহানি জ্ঞান। কেতাবী জ্ঞান দিয়ে এটা সম্ভব না। বর্তমান সময়ে সমাজে যে ধৃষ্ঠতা,অহংকার ও আত্ম-শ্লাঘা বিরাজ করছে তার কারণ মূল্যবোধহীন শিক্ষা। চৈতন্যকে, উপলব্ধিকে জাগ্রত করতে না পারলে সমাজে বিরাজমান অসঙ্গতি দূর হবে না।

যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের মধ্যে রুহানি জ্ঞানের সমাবেশ না ঘটছে ততক্ষণ পর্যন্ত মূল্যবোধ জারিত আচরণ সমাজে প্রতিষ্ঠিত হবে না।
(চলবে)

Categories: Uncategorized

2 Comments

Khondoker Sowkot Ali · February 12, 2020 at 5:37 pm

খুব সুন্দর করে লিখেছেন যা থেকে কিছু শেখার রয়েছে তবে রুহানী আমল তো অনেক কঠিন একটা পদ্ধতি যা এই মাদ্রাসা শিক্ষা থেকে পাওয়া যাবে কিনা সন্দিহান ।

    admin · May 6, 2020 at 10:59 am

    Thank you very much. Sorry for late reply. At least we can try to transform ourselves.

Leave a Reply

Avatar placeholder

Your email address will not be published. Required fields are marked *