জন্ম দেওয়া অতি সাধারণ একটা ঘটনা, কিন্তু পিতা হওয়া কঠিন। মাতা হওয়া আরও কঠিন।

বিস্ময়কর আনন্দের সাথে গভীর ভাবে সম্পৃক্ত হয়ে আছে প্রচন্ড দায়িত্ব কর্তব্য।

সামাজিক, ধর্মীয় সব দিক থেকে এ বিষয়ে কঠোর ভাবে নির্দেশ দেওয়া আছে যে সন্তানের জন্ম দেওয়াই না, তার লালন পালন, নৈতিক আদর্শ ও মূল্যবোধের সাথে তাকে উপযুক্ত ভাবে গড়ে তোলাই একজন পিতা-মাতার উপর অর্পিত দায়িত্ব।

“মুমিনগণ, তোমরা নিজেদেরকে, তোমাদের পরিবার পরিজনকে সেই অগ্নি থেকে রক্ষা করো, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও প্রস্থর।”- সূরা আত -তাহরীম, আয়াত-৬।

তফসীরে রুহুল-মাআনীতে একজন বুজুর্গের উদৃতিতে বলা হয়েছে,”সেই ব্যাক্তি কিয়ামতের দিন সর্বাধিক আযাবে থাকবে, যার পরিবার পরিজন ধর্ম সম্পর্কে মূর্খ ও উদাসীন থাকবে”

সন্তানকে পার্থিব প্রয়োজনীয় সবকিছু তুমি দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারো কিন্তু তাদের জন্য অনুকরনীয়,অনুসরণীয় কোনো নৈতিকমূল্যবোধ জারিত আদর্শ রেখে যেতে না পারলে তারা বয়স্ক হয়ে “উদ্দেশ্যহীন আপদ” হয়ে সিন্দাবাদের ভুতের মতো ঘাড়ে চেপে থাকলে এক “আতঙ্কিত বাস্তবতা” ছাড়া আর কিছুই প্রাপ্তি হবে না।

বর্তমান সময়ের সামাজিক অনেক ঘটনায় এর প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। সন্তানকে সম্পদে পরিণত করার পরিবর্তে তার জন্য বৈধ, অবৈধ, হালাল, হারাম সব রকম পন্থায় সম্পদের জঞ্জাল জড়ো করার হীন প্রচেষ্টায় আমাদের অনেক উচ্চ শিক্ষিতরাই এখন বেশী এগিয়ে। তাঁরা জানেন চুরিটা, দুই নম্বরিটা কত নিখুঁত ভাবে করা যায়। পাবলিক কত অসহায়! নিজেদের ট্যাক্সের টাকার সাবসিডিতে তাদেরকে উচ্চ শিক্ষিত করে আবার তাদের হাতেই সব হারাতে হচ্ছে!

মূল্যবোধের গোয়ালে ফিরে না এসে পশ্চিমা ঘরানার উদ্দাম উল্লাসে জীবনপাত করলে এর পরিণাম কত ভয়াবহ হতে পারে তার কিছু আলামত আমরা দেখা শুরু করেছি।

তোমার যে কোনো ব্যাক্তিগত উদ্যোগ, তা সন্তান মানুষ করা বা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত করা,হতে হবে অনুকরণীয় আচরণের।

“Ethical shortcut” বলে কিছু নেই। এমন আচরণ অনুকরণীয় না যা তোমার সাথে করা হলে তুমি অস্বস্তি বোধ করবে।

ভুল তোমার হতেই পারে, কিন্তু যদি তুমি অনুকরণীয় আদর্শের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাও, অন্যেরা তা পর্যবেক্ষণ করবে এবং সেই অনুপাতে তোমার সাথে আচরণ করবে।

একটা নৈতিক উপদেশ আছে এরকম “If you teach your children three R’s (রিডিং ,রাইটিং ,এরিথমেটিক ) and leave the fourth R (রিলিজিওন), you will get the fifth R (Rascal,বদমাশ)।

লেখা পড়া শিখালে, কিন্তু Religion (গোঁড়ামী বিহীন আদর্শ ধর্ম) শেখালে না, তুমি শেষ পর্যন্ত পাবে একটা বদমাশ,একটা শয়তান।

জীবনের হিসাবে বসলে শুধু প্রমোশন আর বেতনের মধ্যে ঘুরপাক খেলে জীবনটাই মরীচিকা হয়ে উঠবে। নিষ্ফল হতাশায় হাহাকার করতে হবে। নিজের জীবন, পরিবার, Corporate Career সব কিছু একত্রে হলিস্টিক ভাবে  উন্নতির চেষ্ঠা করলে জীবন হয়ে উঠবে এক সর্বাঙ্গীন সুন্দর অনুপম, উপভোগ্য জীবন।

Categories: Uncategorized

0 Comments

Leave a Reply

Avatar placeholder

Your email address will not be published. Required fields are marked *