১০টা লক্ষণ দেখে বুঝবেন আপনার বস আপনাকে ডুবানোর পাঁয়তারা করছেন। 

আপনার পেশাজীবনের উত্থান-পতন আপনার নিয়ত ও কর্মের অনুপাতেই হবে। তবে উটটা বেধেই নামাজে দাঁড়ানো উচিৎ। আপনার ম্যানেজারের আচরণ খেয়াল করবেন। কিছু লক্ষণ দেখে আপনি বুঝতে পারবেন এখানে আপনার ক্যারিয়ার হবে কি না।

১। আপনার বস প্রফেশনাল হলে তিনি অনিচ্ছাকৃত ভুলগুলো হালকা ভাবে দেখবেন এবং আপনার সাথে এমন ভাবে কাজ করবেন যাতে ওই ধরণের ভুলগুলো আবার না হয়।

বদ ম্যানেজার হলে তিনি একটা সিরিয়াসলি দেখবেন, এর উপর লেজারের মতো ফোকাস করবেন। আপনাকে দেয়া কাজগুল একাধিকবার চেক করবেন। এমনকি নিয়মিত কাজ করতেও আপনার বসের অনুমতি নিতে হতে পারে। টীম মিটিঙেও তিনি আপনাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতে পারেন।  

২। হার্ভার্ড বিজিনেস রিভিউ বসের অতি সতর্কতা নিয়ে লিখেছেঃ

বস কিছু পদক্ষেপ নেনে সহকর্মীর কর্মক্ষমতা বাড়ানোর এবং সহকর্মীর ভুলত্রুটি সংশোধনের জন্য। দুঃখজনকভাবে, সহকর্মী বসের এই নিবিড় পর্যবেক্ষণকে বিস্বাস এবং আস্থার অভাব মনে করেন।

একসময় সে নিজের চিন্তা এবং সক্ষমতাকে সন্দেহের চোখে দেখা শুরু করেন, একা একা সিদ্ধান্ত নেওয়ার উৎসাহ হারায়ে ফেলেন বা কোন কাজ করার উদ্দীপনাই হারায়ে ফেলেন। পরিণাম প্রতিষ্ঠান থেকে নিষ্ক্রান্ত হওয়া।

৩। আপনার বস আপনার জন্য বরাদ্দ কাজ দেওয়াও বন্ধ করে দেন। এতে সমস্যা আরও সমস্যাসঙ্কুল হয়ে ওঠে। যা বস’রা উপলব্ধি করেন না তা হচ্ছে তাদের কঠিন কর্তামি অধস্তনের কর্মোৎপাদনশীলতা কমায়ে নিয়ে আসে এবং তাদের কাজের উৎসাহকে দুইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেঃ ক) কর্মক্ষেত্রে অধস্তনকে কাজের স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করে খ) অধস্তন নিজেকে তুচ্ছ ভাবতে শুর করেন।

হার্ভার্ড বিজিনেস রিভিয়ের জ্যা ফ্রাঙ্কইজ ম্যানযনি বলেন,  কঠোর নিয়ন্ত্রণ প্রকারন্তরে বুঝায় যে কঠিন পথনির্দেশ ছাড়া অধস্তন কাজ করতে সক্ষম না। আর অধস্তন যখন এইটা আঁচ করতে পারে এটা তার আত্মবিশ্বাসে কুঠারাঘাত করে।

৪)আপনার বস আপনাকে এড়ায়ে যেতে থাকেন। অথবা কোন ভুলের কারণে এমনভাবে সাড়া দেন যা আপনাকে বিভ্রান্ত ও অর্থহীন ভাবতে বাধ্য করে। কেউই এই অসমতাকে সমাধানের দৃষ্টিতে দেখেন না এবং সমস্যাটা  বাড়তে থাকে ও গভিরতর হতে থাকে। পরিণতিতে হয় অধস্তন চাকরিটা ছেড়ে দেন নয়তো বস তাকে প্রতিষ্ঠান থেকে বার করে দেন।

এটা একটা বর্ডারলাইন-টক্সিক-রিলেশানশিপ এবং এর দুঃখজনক প্রলম্বন সমাধানের অতীত এক জটিল অবস্থা তৈরি করে।

৫।নেতৃত্বের অবস্থান থেকে পেশাগত সাফল্য অর্জনের জন্য একটা গ্রোথ-মাইন্ডসেট দরকার।

আপনার বস চিন্তায় যদি কোন ভুল অনুভব করেন তাহলে তাঁর উচিৎ কাজটা করার জন্য নতুন কোন চিন্তাকে উৎসাহিত করা। যদি আপনার বস কাজের পদ্ধতিতে পরিবর্তন না আনেন এবং সে পথেই কাজ চালিয়ে নেন যা অকার্যকর- আপনি নিশ্চিত থাকবেন যে এই পথ আপনাকে বিফলতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

৬। আপনার বস আপনার উপর সঠিক সম্পদ বিনিয়োগ করছেন না। আপনার বস যদি কাজটা করার জন্য সঠিক উপাদান সরবরাহ না করেন তার অর্থ সে বোঝাতে চাইছেন যে আপনি ভালো কাজ করতে বিশ্বস্ত ও উপযুক্ত না।  এটা হতে পারে যে সে আপনাকে অপছন্দ করেন এবং চাচ্ছেন যে আপনি একা যা পারেন তাই করেন। এ আচরণ গুলো এমন হতে পারে যে আপনার কাজের বাজেট কেটে দেওয়া হোল, বা আপনাকে অত্যাধিক কাজের লোড দেওয়া হোল বা আপনাকে মিটিং থেকে বের করে বলা হোল যে “আপনি ওই কাজটা একটু দেখেন।“

৭। আপনার আপনাকে বস অপ্রয়োজনীয় কাজে ব্যাস্ত রাখতে পারেন । বস যদি আপনাকে প্রতিদিনের কাজের নোট লিখা থেকে শুরু করে তুচ্ছ কাজে সময় নষ্ট করায় তাহলে বুঝবেন যে সে আপনার ‘সময়”র মতো মুল্যবান সম্পদ নষ্ট করছেন।

যখন আপনার বস তার মাইক্রোম্যানেজমেন্টে আপনার সময় নষ্ট করতে উদ্যত তখন বুঝবেন সে আর যা কিছু আশা করুক না কেন, আপনার সাফল্য কিন্তু চান না যা আপনার পেশাজীবনের অগ্রগতির পথের এক অশুভ লক্ষণ।  

৮। যখন আপনি কোন  ভালো কিছু অর্জন করেন তখন আপনার বস তা লুকাতে চেষ্টা করেন বা অবমূল্যায়ন করেন। একাদিক্রমে সাফল্য অর্জন করার পরও যখন আপনি আপনার কাজের কোন স্বীকৃতি না পান তখন বুঝে যাবেন যে এই প্রতিষ্ঠানে আপনার ভবিষ্যৎ ভালো না। সে আপনাকে আপনার যথাযথ মূল্যায়নের পথ আটকায়ে রেখেছে। আপনাকে মোটিভেটেড ও সফল হতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে।

৯। আপনার বস আপনার সহকর্মীদের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রেও স্পীডব্রেকার তৈরি করে রেখেছেন। আপনার বস যদি ক্রসফাংশানাল মিটিঙে আপনাকে পাঠাতে বিস্বাস না করেন এবং গুরুত্বপূর্ণ কমুনিকেশানে আপনাকে অন্ধকারে রাখেন তাহলে বুঝে যাবেন যে সে আপনাকে স্বল্প মেয়াদে ও দীর্ঘ মেয়াদে পরাজিত হওয়ার ফাঁদ পেতেছেন।

১০। আপনার বস শুধু আপনাকে “ বিশেষ  প্রোজেক্ট”এর কাজ দিচ্ছেন! বুঝবেন এর পরিণাম ভালো না। প্রতিষ্ঠানে আপনি নিরাপত্তাহীনতার দিকে এগুচ্ছেন। আপনাকে ডুবন্ত জাহাজে ভাসায়ে আপনার বস আপনাকে রিঙের বাইরে পাঠালো- যা প্রথম দিন আপনাকে দেখে সে প্ল্যান করেছিল।

কাজ করে যান। নিজেকে তৈরি করুন। চোখ কান খুলে রাখুন। প্রতিষ্ঠান যেমন দেখে আপনি প্রতিষ্ঠানের উপযুক্ত কি না, আপনিও পরীক্ষা করতে শুরু করেন এই প্রতিষ্ঠান আপনার উপযুক্ত কি না।

Categories: Uncategorized

0 Comments

Leave a Reply

Avatar placeholder

Your email address will not be published. Required fields are marked *