আগের যুগে সিনিওররাই আমাদেকে পথ দেখাতেন। কিন্তু আজকের দিনে সেই পথ দেখানোর মানুষের অভাব। তাই পার্সোনাল মেন্টরিং অনেক গুরুত্বপূর্ণ একজন মানুষের ক্যারিয়ার গড়ার ক্ষেত্রে।
১৪ কেজি'র বেশী চালের দাম দিয়ে প্রতি মাসে একটা World Executive Digest কিনতাম অথচ আমার নতুন সংসারের এই পরিমান চাল হলে প্রায় ২ মাস চলে যেতো!!
- Nazar E Zilani
আমাদের পেশাজীবনের প্রথমদিকে মেন্টরিং বা ট্রেনিং এর এত সুযোগ ছিলো না।
আমাদের সিনিওরদের অধিকাংশই ছিলেন এক একজন প্রতিষ্ঠান। তাদের ওঠাবসা, চলাফেরা, কথাবার্তা, শরীরী ভাষা, বিস্ময় জাগানিয়া জ্ঞান, দৈনন্দিন কাজ, জটিল সমস্যার সাবলিল সমাধান, উচচ নৈতিক আদর্শ ছিলো অনুসরণ করার মতো।
তাঁরা হাতে ধরে ধরে একটু একটু শেখাতেন। তবে তাদের প্রতিটা পদক্ষেপ অনুসরণ করে অনেক কিছু শিখেছি।
বিদেশী বইপত্র, ও জার্নাল, ম্যাগাজিনের গ্রাহক হয়ে সেগুলো সংগ্রহই ছিলো একমাত্র পথ।
হংকং থেকে প্রকাশিত World Executive Digest ছিলো অত্যান্ত উঁচু মানের প্রফেশনাল প্রকাশনা। যখন চালের দাম ৮ টাকা কেজি তখন এই WED এর জন্য প্রতি মাসে ব্যায় হতো ১১৫ টাকা।
চাকরীর প্রথম জীবন। অল্প বেতন। বিবাহ ও প্রথম সন্তান। বাবা স্ট্রোক করলে পরিবারের দায়িত্বের নেয়ামত।
এতো কিছুর পরও ১৪ কেজি'র বেশী চালের দাম দিয়ে প্রতি মাসে একটা World Executive Digest কিনতাম অথচ আমার নতুন সংসারের এই পরিমান চাল হলে প্রায় ২ মাস চলে যেতো!!
সে সব দিন গত। এখন ইন্টারনেট, ট্রেনিং, মেন্টরিং, অন লাইন কোর্স কত কিছু আছে শুধু নাই সেই সব লিডারদের মতো লিডার।
"......
মনের ময়ূর মরেছে ঐ
ময়ূর মহলেই
দেখি মুকুটটা তো পড়ে আছে
রাজাই শুধু নেই"- গীতিকার পূলক বন্দোপধ্যায়ের লেখা, মান্না দে'র কণ্ঠ।
চাকুরি জীবনে এসে অনেকেই ভালো মেন্টর বা গুরু পান না যারা নতুন সহকর্মীর ভালো দিকগুলো খুঁজে সেগুলোকে পরিচর্যা করবে আবার তার কোনো ত্রূটি থাকলে তা সহকর্মীর আত্মসম্মান বজায় রেখে নীরবে সংশোধন করে দিবে।
সহকর্মীকে কর্ম জীবনে উন্নতির সোপান গুলো স্বপ্নদ্রষ্টার মতো দেখায়ে তাকে উৎসাহিত করবে, কর্মচঞ্চল রাখবে, তার মধ্যে দেখবে আগামীদিনের উজ্জ্বল কর্মকর্তা।
এগুলো আজকাল খুব একটা দেখা যায় না। ফলে নতুন নিয়োগপ্রাপ্তরা এক হতাশার মধ্যে দিন কাটাতে থাকে। নতুন কিছু শিখতে না পেরে একঘেয়েমি দেখা দেয়। কমতে থাকে উৎসাহ। কমতে থাকে তার উজ্জ্বল আলো।
আমি আশা করি শার্পনার এই শূন্য যায়গায় কাঙ্ক্ষিত অবদান রেখে যেতে পারবে।